Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কৃষিতে অর্জন অনেক। আরও যেতে হবে বহুদূর

কৃষিতে অর্জন অনেক। আরও যেতে হবে বহুদূর

ড. জাহাঙ্গীর আলম
পঞ্চাশের দশকে পাকিস্তান ছিল একটি নবীন রাষ্ট্র। তার একাংশ ছিল পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান। অবহেলা, নিগৃহ ও বৈষম্যের যাঁতাকলে পিষ্ট একটি প্রদেশ। তখন এর অর্থনীতি ছিল চরম দারিদ্র্যের মধ্যে নিমজ্জিত। রোগ, শোক আর খাদ্যাভাব ছিল পূর্ব বাংলার মানুষের নিত্যসঙ্গী। এরপর অনেক সংগ্রাম-প্রতিরোধ শেষে, অনেক রক্ত ঝরিয়ে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করেছি। এটি ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের ৫০তম বার্ষিকী। কৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি আর আমদানি বৃদ্ধির জন্য বছরটি ছিল বেশ আলোচিত। তবে সার্বিক বিবেচনায় ২০২১ সালে কৃষি খাতের সম্প্রসারণ ঘটেছে। বেড়েছে কৃষি/জিডিপির আকার। নতুন ভিত্তি বছর অনুযায়ী জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান হিসাব করা হয় ১৪৪ ধরনের শস্যের তথ্য আমলে নিয়ে, যেটি আগের হিসেবে ছিল ১২৪।     কৃষি খাতে মোট মূল্যসংযোজন (জিভিএ) বর্তমান মূল্যে বিগত বছরে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬১ বিলিয়ন টাকা। যেটি আগের হিসেবে ছিল ৩ হাজার ৮৪৬ বিলিয়ন টাকা। বিশে^র খাদ্য সূচকে কয়েক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। পুষ্টি গ্রহণের দিক থেকেও অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। ফলমূল ও শাকসবজির উৎপাদন দ্রুত বাড়ছে। গত ৫০ বছরে সবজির উৎপাদন বেড়েছে ৫ গুণ। সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশে^ তৃতীয়। প্রধান অর্থকরী ফসল পাটের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ^বাজারে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি ও দেশের অভ্যন্তরে কাঁচাপাটের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সুদিন ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছে গ্রামের কৃষক। 
গত ২ বছর করোনার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকা- ছিল অনেকটা স্থবির। এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি। জেগে উঠেছে ঝিমিয়ে পড়া মানুষ। বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। করোনায় জীবনহানির ভয় এখন অনেকটাই কম। ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। গণহারে টিকা নিচ্ছেন দেশের জনগণ। সংক্রমণের হার নেমে এসেছে নিচে। বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি শীর্ষ ঘনবসতির দেশ। কিন্তু করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের হার অপেক্ষাকৃত কম। এটি বর্তমান সরকারের বড় সাফল্য। এখন অর্থনৈতিক কর্মকা-ে প্রাণ ফিরে আসায় দ্রুত বৃদ্ধি পাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার। আয় বাড়বে সাধারণ মানুষের। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ২ বছর অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণে দেশের সাধারণ মানুষের দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক সংকট এখনো দৃশ্যমান। এরই মাঝে তারা অনেকটা চিঁড়া-চ্যাপটা হয়ে আছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির অভিঘাতে। বাজারে মোটা চালের কেজি উঠেছে ৫০ টাকায়, ৭০ টাকা ছুঁয়েছে সরু চালের দাম। ডালের কেজি ১৩০ টাকা। বহুল ব্যবহৃত ভোজ্যতেল সয়াবিনের লিটার ১৫০ টাকা। চিনি প্রতি কেজি ৮৫ টাকা। চলমান সমস্যার গভীরতা অনুধাবন করে আমদানি শুল্ক হ্রাস করছে সরকার। অবারিত করা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি। আমরা কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলে অহরহ গর্ব করে থাকি। তা সত্যও বটে। কিন্তু বড় ধরনের আমদানি নির্ভরতা এখনো রয়ে গেছে আমাদের। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রাথমিক পণ্যের আমদানি খরচ ছিল ১৯৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা বেড়ে যায় ৭২৭০    মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৪২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চাল আমদানির পরিমাণ ২০১৬-১৭ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল কম, যথাক্রমে ১৩৩ হাজার এবং ২০৬ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু ২০১৭-১৮ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে তা অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে ৩৯ লাখ এবং সাড়ে ১৩ লাখ টনে এসে দাঁড়ায়।
২০২০-২১ অর্থবছরে আমাদের চাল ও গম আমদানি করতে হয়েছে ৬৭.০২ মিলিয়ন মেট্রিক টন। তার সঙ্গে যোগ করতে হবে ২৪ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা। প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, গত ১২ বছর ধরে কৃষি খাতে উৎপাদন বেড়েছে প্রতি বছর গড়ে ৩.৯ শতাংশ হারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সার্বিকভাবে কৃষিপণ্যের আমদানির রাশ টেনে ধরা তেমন সম্ভব হয়নি। চাল আমদানিতে এখন বিশে^ দ্বিতীয় বাংলাদেশ। এর উপরে আছে চীন। নিচে ফিলিপিন, নাইজেরিয়া ও সৌদি আরব। দেশের অভ্যন্তরে আরও দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধি করা ছাড়া আমদানি প্রতিস্থাপন সম্ভবও নয়। কেউ কেউ বলে থাকেন, চাল উৎপাদনে আমরা বড় ধরনের উদ্বৃত্ত অবলোকন করছি। প্রশ্ন হচ্ছে, তারপরও চালের এত বেশি মূল্যবৃদ্ধির হেতু কী? কেন আমরা এত বেশি পরিমাণে আমদানি করছি চাল। পক্ষান্তরে আলুর বাজারে এত মূল্য হ্রাস কেন? নিঃসন্দেহে তা অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে বড় সাফল্য ও উদ্বৃত্তের জন্য। অতএব পর্যাপ্ত উৎপাদন বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ স্বয়ম্ভরতা অর্জন করাই হলো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রধান কৌশল।
ডালের বর্তমান উৎপাদন প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টন। এর মধ্যে মুগ এবং মসুরি ডালের হিস্যা প্রায় ৬০ শতাংশ। বাকি খেসারি, ছোলা, মাসকলাই, মটর, অড়হর ও ফেলন। মসুরি ডালের উৎপাদন ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যান্য ডালের উৎপাদন অনেকটাই স্থবির হয়ে আছে। লেথারজিক রোগের আশঙ্কায় খেসারির ভোগ ও উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। ডাল প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এটি গরিবের মাংস। এর ব্যবহার সার্বজনীন। বছরে আমদানি করা হয় ৮ থেকে ৯ লাখ টন ডাল। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মসুরি ডাল। বাকি ছোলা ও অন্যান্য। ডাল আমদানি খরচ ২০০৯-১০ অর্থবছরে ছিল ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা ৫৯০ মিলিয়ন ডলারে বৃদ্ধি পায়। প্রধান রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়া,  কানাডা, নেপাল ও ভারত। অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার ডাল মোটা। বর্তমান বাজার দর ৯০ টাকা প্রতি কেজি। নেপাল থেকে আমদানিকৃত সরু ডালের বর্তমান বাজারমূল্য ১৩০ টাকা কেজি। গত বছরের তুলনায় এবার ডালের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। তাতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের। বাংলাদেশে ডাল উৎপাদন বৃদ্ধির বড় অন্তরায় এখানকার আবহাওয়া। অধিক বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা ডাল চাষের জন্য ক্ষতিকর। তবে আমাদের পরিবেশ ও আবহাওয়া উপযোগী নতুন জাতের ডাল উদ্ভাবন ও তা সম্প্রসারণের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে ডাল উৎপাদনে ঘাটতি মেটানো সম্ভব। 
সম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে ভোজ্যতেল। ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ টাকা। পাম অয়েল ও সূর্যমুখী তেলের দামও অনেক চড়া। দেশে উৎপাদিত ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির হার অপেক্ষাকৃত কম। সরিষা, তিল, তিসি ও রাইস ব্র্যান তেলের ক্ষেত্রে তেমন বাড়েনি দাম। মূল্যবৃদ্ধির জোর ধাক্কা লেগেছে আমদানিকৃত তেলের উপর। করোনার অভিঘাতে বিদেশে সয়াবিন ও পাম অয়েলের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে আমদানি মূল্য ও পরিবহন খরচ। তাতে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। বাংলাদেশে তেলবীজের মোট উৎপাদন ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টন। বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ২২ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৮ টন তেলবীজের। উৎপাদিত তেলবীজের ৬৪ শতাংশ সরিষা। বাকি ৩৬ শতাংশ হিস্যা রয়েছে সয়াবিন, বাদাম, তিল, তিসি ও সূর্যমুখীর। বছরের পর বছর ভোজ্যতেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৩ সালে জনপ্রতি দৈনিক ভোজ্যতেল ভোগের পরিমাণ ছিল ১১.৮ গ্রাম। ২০২০ সালে তা ২২ গ্রামে উন্নীত হয়। তাতে বৃদ্ধি পায় ভোজ্যতেলের মোট চাহিদা ও আমদানি। 
২০০৯-১০ অর্থবছরে ভোজ্যতেল ও তেলবীজ আমাদানির মোট খরচ ছিল ১১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৪১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। এই পরনির্ভরতা হ্রাসের জন্য দরকার তেলবীজের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানো। এ ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে আবাদি জমির স্বল্পতা। বোরো ধান এবং অন্যান্য উচ্চমূল্যের শস্যের সঙ্গে তেল ফসলের প্রতিযোগিতা। বর্তমানে সরিষা ও সয়াবিনের স্বল্প মেয়াদি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। তা প্রচলিত শস্য বিন্যাসে অভিযোজন করা সম্ভব। তাছাড়া চালের কুড়া থেকে এবং ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদনের সম্প্রসারণ ঘটছে। আগামীতে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি হ্রাস পাবে। 
বর্তমানে বহুল আলোচিত একটি ভোগ্যপণ্য হচ্ছে চিনি। এর খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। এই পণ্যটির বাজার এখন পুরোটাই বেসরকারি খাতের নিয়ন্ত্রণে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ সুগার এন্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের আওতায় পরিচালিত চিনিকলগুলো থেকে এবার ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎপাদিত হতে পারে মাত্র ৩০ হাজার টন চিনি। এটুকু     সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন খাতে রেশন হিসেবে সরবরাহ করার কাজেই লেগে যাবে। বাজারে চিনির মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য হস্তক্ষেপ করার মতো চিনি সরকারের হাতে নেই। সুতরাং বাজারের উচ্চমূল্য অবদমনে সরকারের সরাসরি প্রভাব খুবই সামান্য। দেশে সরকারি চিনিকলগুলোর সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে ৬টি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গত নভেম্বরে। বাকি ৯টি চলছে ঢিমে তালে। চিনিকলগুলো বন্ধ করে দেয়ার প্রধান কারণ ক্রমাগত লোকসান।
গত ৫ বছরে ৪০ বিলিয়ন টাকা লোকসান দিয়েছে সরকারি    চিনিকলগুলো। তদুপরি এদের রয়েছে ৮০ বিলিয়ন টাকা ব্যাংক ঋণ। এগুলো লোকসানে থাকার কারণ হলো চিনির বেশি উৎপাদন খরচ। মিলভেদে প্রতি কেজি খরচ গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। কিন্তু তা বিক্রি করতে হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া প্রক্রিয়াকরণ লোকসান, অতিরিক্ত কর্মচারীর সংখ্যা, দুর্নীতি, ইক্ষু থেকে চিনি আহরণের নিম্নতম হার মিলগুলো লোকসানে থাকার অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে চিনি আহরণের গড় হার ৫ শতাংশের উপরে। ভারতে এর পরিমাণ ১০ শতাংশের উপরে। আমাদের কম চিনি আহরণের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিলম্বে ইক্ষু ক্রাসিং, ভালো জাতের ইক্ষু আবাদ না করা এবং যথাযথভাবে জমিতে সার প্রয়োগ না করা। দেশের কৃষকগণ ইক্ষু উৎপাদনে অনেকটাই নিরুৎসাহিত তাদের লাভ কমে যাওয়ায়। তাতে ইক্ষুর আবাদি এলাকায় দারুণ ভাটা পড়েছে। উৎপাদন ও ফলন হ্রাস পাচ্ছে। মাসের পর মাস কৃষকগণ চিনিকল থেকে তাদের প্রদত্ত ইক্ষুর মূল্য বুঝে পাচ্ছেন না। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পাচ্ছেন না   প্রয়োজনীয় উপকরণ সহায়তা। চিনিকলের শ্রমিকরা পাচ্ছেন না তাদের নিয়মিত বেতন। আমাদের রাষ্ট্রীয় খাতের চিনিকলগুলো অনেক পুরনো। সরকারি ১৫টির মধ্যে ১২টি স্বাধীনতার আগে এবং ৩টি পরে প্রতিষ্ঠিত। প্রয়োজনীয় আধুনিকায়নের      (বিএমআরআই) অভাবে এগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা নেমে এসেছে অনেক নিচে। সরকারি চিনিকলগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২ লাখ টনের উপরে। সেক্ষেত্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরে চিনির মোট উৎপাদন হয়েছিল ৩৭ হাজার টন। এবার তা আরও নেমে এসেছে ৩০ হাজার টনে। ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে ইক্ষুর আবাদি এলাকা ছিল ১.৮ লাখ হেক্টর। এখন তা ০.৭৪ লাখ হেক্টর। দেশে মোট চিনির চাহিদা কম বেশি প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। তার মাত্র ১.৫ শতাংশ সরবরাহ করছে সরকারি চিনিকলগুলো। বাকি চিনির চাহিদা মেটাতে হয় আমদানির মাধ্যমে। ওই আমদানির পুরোটা বেসরকারি খাতের কব্জায়। এমতাবস্থায় সাধারণ ভোক্তাদের স্বার্থে চিনির মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। সে জন্য বন্ধ চিনিকলগুলো দ্রুত চালু করার ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আধুনিকায়নের মাধ্যমে এদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার। তাছাড়া চিনি উৎপাদনের পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প হিসেবেও এসব কারখানা গড়ে তোলা দরকার এবং উৎপাদনে বহুমাত্রিকতা আনয়ন করা দরকার। 
বাংলাদেশে কৃষির উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমদানিও করতে হচ্ছে অনেক। তা প্রতিস্থাপনের জন্য উৎপাদনের পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। কৃষকদের সহায়তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছেন। প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। কৃষি খাতে উদার ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশের গরিব কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত ভর্তুকির টাকা পুরোপুরি খরচ করা হয় না। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদত্ত প্রণোদনার টাকা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে বিলম্ব হয় অনেক। এসব ক্ষেত্রে অনীহা ও অদক্ষতা থাকতে পারে। তা খতিয়ে দেখা উচিত। কৃষি ও কৃষকদের কল্যাণে উপকরণ ও নগদ সহায়তা বাড়ানো উচিত। তাদের জন্য উৎপাদিত পণ্যের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করা উচিত। তাতে ত্বরান্বিত হবে  কৃষির সার্বিক উৎপাদন। হ্রাস পাবে আমদানি। ন্যায্যমূল্যে   কৃষিপণ্য ক্রয় করতে সক্ষম হবেন দেশের গরিব ভোক্তাগণ। এর জন্য একটি সমন্বিত কৃষিনীতি প্রণয়ন করা একান্ত দরকার।

লেখক : কৃষি অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও শিক্ষাবিদ।      মোবাইল: ০১৭১৪২০৪৯১০, ই-মেইল:alamj52@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon